Translate

সোমবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

অনলাইনে ঘরে বসে কাজ করে টাকা আয়

অনলাইনে ঘরে বসে কাজ করে টাকা উপার্জনের কথা শোনেননি, আজকাল এমন লোক হয়তো খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হবে। তবে যারা এটা করছে এর মধ্যে কতজন সঠিক উপায়ে নিয়মিত আয় রোজগার করছে সেটা ভাববার বিষয়।
কিছু মানুষ এই ঘটনা শুনেই লিফিয়ে পড়ছে আয় করবে বলে। তারাতারি কিনে নিচ্ছে কম্পিউটার আর ভর্তি হয়ে যাচ্ছে কোনো অখ্যাত ট্রেনিং প্রতিষ্ঠানে। হয়তো তারা জানেই না সেইসব প্রতিষ্ঠানে কি কি শেখানো হয় বা কারা শেখাবে। এমনভাবে আগালে আপনি হয়তো অনেকগুলো টাকা খরচ করে প্রতারিত হবেন। তাই কোনোকিছু ভালোভাবে না জেনেশুনে করার আগে সম্পুর্ন পড়ে নিন এই লেখাটি। আমরা চেষ্টা করেছি অনালাইনে সঠিক উপায়ে সৎভাবে আয় করার উপায় সমুহ ধাপে ধাপে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করার।
অনলাইনে আয় করার জন্য বেশকিছু কাজের সুযোগ রয়েছে।
এর মধ্যে ওয়েব এ্যান্ড সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, গ্রফিক্স ডিজাইন এ্যান্ড ক্রিয়েটিভ, ডাটা এন্ট্রি, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন, সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, গুগল এ্যাডসেন্স, ফরেক্স ট্রেডিং, অ্যাডমিন সাপোর্ট এবং রাইটিং এ্যান্ড ট্রানস্লেশন উল্লেখযোগ্য। অনলাইনে কাজ পাওয়ার প্রথম স্বর্ত হিসেবে আপনাকে উপরের যেকোনো একটি কাজ ভালোভাবে আয়ত্ত করতে হবে অর্থাৎ আপনি যে কাজ করতে চান সেটা অবশ্যই উচ্চমানসম্পন্ন হওয়া বাধ্যতামূলক। চলুন দেখে নেয়া যাক আনলাইনে কি কি উপায়ে আয় করা যার তার বিস্তারিত।
earn_money_online
ওয়েব এ্যান্ড সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টঃ
আপনি যদি কম্পিউটার সাইন্স এর ছাত্র হয়ে থাকেন তাহলে নিঃসন্দেহে এটাতে ভালো করর সুযোগ আপনার রয়েছে। তবে তার মানে এই নয় যে অন্যেরা এটা করতে পারবে না। ওয়েব এ্যান্ড সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট এর মধ্যে দুটি বিষয় রয়েছে‌ একটি ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট আর অন্যটি সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট। আবার এই দুটির মাঝেও রয়েছে বিভিন্ন ধরনের কাজ। যেমন ই-কমার্স ডেভেলপমেন্ট, গেম ডেভেলপমেন্ট, মোবাইল এ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট,ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট ও ডেস্কটপ সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট। এই কাজে আসতে হলে আপনাকে বেশ কয়েকটি প্রগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ বেশ ভালোভাবে আয়ত্ত করতে হবে। বাংলাদেশের অধিকাংশ অউটসোর্সিং প্রফেশনালরা ওয়েব এ্যান্ড সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট এর কাজ করে থাকেন। এই কাজের যেমন রয়েছে চাহিদা তেমনি দিনে দিনে বাড়ছে এর প্রতিযোগিদের সংখ্যা। তবে মানসম্মত কাজ জানা থাকলে, আর অল্পতেই ধৈর্য না হারালে আপনিও হতে পারেন একজন নিয়মিত অউটসোর্সিং প্রফেশনাল। আপওয়ার্ক,ইল্যান্স, গুরু, ফ্রিল্যান্সার সফটওয়্যার ডেভেলপারদের হতে পারে আদর্শ মার্কেটপ্লেস।
freelance
গ্রফিক্স ডিজাইন এ্যান্ড ক্রিয়েটিভঃ
অনলাইন মার্কেটে গ্রফিক্স ডিজাইন এ্যান্ড ক্রিয়েটিভ এর চাহিদা ব্যাপক। এই কাজ শেখার ক্ষেত্রে আপনি কম্পিউটার সাইন্স এর ছাত্র কিনা, সেটা মোটেই গুরুত্বপুর্ন বিষয়তো নয়ই বরং আপনি মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশুনা করলেও এই কাজ শিখতে ও করতে পারবেন। কম্পিউটার সম্পর্কে মৌলিক কিছু ধারনা থাকলে আর একটু ইংরেজী জানা থাকলেই আপনি গ্রফিক্স ডিজাইন এ্যান্ড ক্রিয়েটিভ এর কাজ করতে পারবেন। এই কাজ শেখার জন্য ইন্টারনেটে প্রচুর পরিমান টিউটোরিয়াল পাওয়া যাবে, যা অধ্যায়ন করেই আপনি হয়ে উঠতে পারেন এখন দক্ষ গ্রাফিক্স ডিজাইনার। সাধারনত মার্কেটপ্লেসে, ওয়েব টেমপ্লেট ডিজাইন, ব্যানার ডিজাইন, ফটো এডিটিং, লোগো ডিজাইন, কার্ড ডিজাইনের কাজ যথেষ্ট পাওয়া যায় যা আপনার আয়ের উত্তম উপায় হতে পারে। গ্রাফিকরিভার ও ৯৯ডিজাইন গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের জন্য হয়ে পারে আদর্শ মার্কেটপ্লেস।
ডাটা এন্ট্রিঃ
এমন একটি সময় ছিলো যখন বাংলাদেশের মানুষ অউটসোর্সিং বলতে ডাটা এন্ট্রিকে বুঝতো। অন্যান্য কাজে তুলনায় ডাটা এন্ট্রির কাজ সহজ বলে মানুষ সহজেই এই কাজের প্রতি ঝুকে পড়ে। আপওয়ার্ক,ইল্যান্স, গুরু, ফ্রিল্যান্সার এ প্রচুর পরিমান ডাটা এন্ট্রির কাজ পাওয়া যায়। ডাটা এন্ট্রি কাজের জন্য MS Word, MS Excel এবং MS PowerPoint একটু জানা থাকলে ভালো হয়। তবে বিশেষ করে মাইক্রোসফট এক্সেল ২০০৭ সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকতে হয় ।
SEO-Tips-and-Tricks-2015-Target-SEO
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনঃ
ধরুন আপনার একটি ওয়েবসাইট আছে এবং তাতে যে কন্টেন্ট রয়েছে তা লিখে গুগলে সার্চ করলে আপনার ওয়েবসাইটের লিঙ্ক গুগলের তিন নাম্বার পেজে দেখায়। তার করন একটাই, আপনার ওয়েবসাইট গুগল নামক সার্চ ইঞ্জিনে উপরে দেখানোর জন্য উত্তমরুপে প্রস্তুত নয়। তাই গুগল বা অন্য কোনো সার্চ ইঞ্জিনে একটি সাইটকে প্রথমদিকে প্রদর্শন করানোর জন্য যে উপায় অবলম্বন করতে হয় সেই সকল কার্যাবলিকে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বলে। যদি আপনি একটু সুকৌশলি হতে পারেন তবে এটি হতে পারে আপনার অনলাইন আয়ের একমাত্র উপায়। বিশ্বের বড় বড় মার্কেটপ্লেসগুলোতে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের প্রচুর পরিমান কাজ পাওয়া যায়। তবে এই কাজের প্রতিযোগী অনেক বেশি হওয়ায় আপনাকে কাজ পেতে দেরী হতে পারে। আপওয়ার্ক, ইল্যান্স,  গুরু, ফ্রিল্যান্সার এ সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের কাজ করার জন্য আদর্শ মার্কেটপ্লেস।
সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং হচ্ছে এমন একটি মার্কেটিং পদ্ধতি, যেখানে অনলাইনে নিজস্ব, পন্য বা সার্ভিস ফলপ্রসুভাবে প্রমোট করা যায়। www.facebook.com, www.youtube.com, www.twitter.com, www.flickr.com, www.plus.google.com, www.linkedin.com www.tagged.com, www.digg.com এই সাইটগুলো সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর সবচেয়ে ভালো সাইট। অনলাইনে নিজস্ব পন্যের বা তথ্য প্রচারের অনেক মাধ্যম রয়েছে। তন্মধ্যে, সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং খুবই- কার্যকর একটি পদ্ধতি যেখানে খুব সহজেই দ্রুততার সাথে নিজস্ব সাইট,পন্য,সার্ভিসসমূহের প্রচারণা চালানো যায়। বর্তমানে প্রায় সবগুলো ফ্রিল্যান্সিং সাইটে সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর প্রচুর কাজ পাওয়া যায়। মার্কেটপ্লেসে এ বিষয়ক কাজের জন্য SMM নামে আলাদা সেকশন রয়েছে ।
create google adsense account
গুগল এ্যাডসেন্সঃ
গুগল এ্যাডসেন্স এর মাধ্যমে আয় করতে হলে আপনাকে আবশ্যই একটি ওয়েবসাইটের মালিক হতে হবে। কিছুদিন আগেও বাংলা ওয়েবসাইটে গুগল এ্যাডসেন্স ছিলো না যা এখন আছে। আপনার ওয়েবসাইটে প্রচুর পরিমান ইউনিক কন্টেন্ট দিয়ে দিন যাতে এই সাইটের পাঠক বা দর্শক প্রতিনিয়ত আসতে থাকে। এরপর আপনি গুগলের কাছে আপনার সাইটের লিঙ্ক দিয়ে গুগল এ্যাডসেন্স এর জন্য আবেদন করুন। যদি আপনার সাইটে ভিজিটর যথেষ্ঠ থাকে এবং ভালো মানে কন্টেন্ট থাকে তাহলে কিছুদিনের মধ্যেই গুগল আপনার সাইটের জন্য একটি এ্যাডসেন্স কোড পাঠাবে। যা আপনার সাইটে বিজ্ঞাপন দেখানোর বিশেষ জায়গায় বসিয়ে দিলে সেখানে একটি বিজ্ঞাপন দেখাবে। আপনার ওয়েব সাইটের ভিজিটর যদি ঐ বিজ্ঞাপনে ক্লিক করে তাহলেই আপনার আয় হতে শুরু করবে।
Stacks of coins with the word FOREX isolated on white background
Stacks of coins with the word FOREX isolated on white background
ফরেক্স ট্রেডিং
আজকাল অনেকের মুখেই ফরেক্স ট্রেডিং এর মাধ্যমে অধিক পরিমান আয়ের কথা শোনা যায়। কেউ কেউ চারপাশের মানুষদের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত ফরেক্স শুনতে শুনতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন অথচ জানেননা ফরেক্স আসলে কি। ফরেক্স হল এমন একটি ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং মার্কেট যেখানে একটি মুদ্রার বিপরিতে আরেকটি মুদ্রা কেনাবেচা করে প্রফিট করা যায়। কিন্তু মনের ভিতর প্রশ্ন জাগছে কিভাবে ফরেক্স শিখবেন বা করবেন।
তাহলে, একটু খোঁজ খবর নিয়ে সোজা চলে যান কোনো ফরেক্স ট্রেনিং সেন্টারে। অথবা পরিচিত এমন কেউ ফরেক্স ট্রেডিং করছে তার কাছ থেকেও শিখে নিতে পারে্ন অনেক বিশয়াদি। ফরেক্স ট্রডিং এর ক্ষেত্রে নিয়মিত অধ্যায়নের কোনো বিকল্প নেই। আপনার এনালিটিক্যাল এবেলিটি যত ভালো হবে এই ব্যাবসায়ে আপনি তত ভালো করতে পারবেন। এইবার আপনার স্বাভাবিক কাজকর্ম ঠিক রেখে সম্পূর্ণ অপশনাল একটি বিষয় হিসেবে ফরেক্স প্র্যাকটিস করুন, অতিদ্রুত এই মার্কেট থেকে রিটার্ন আশা করতে যাবেন না। অতিরিক্ত একটি বিষয় হিসেবে এগুতে থাকেন এক পর্যায়ে আপনি যখন আবিষ্কার করবেন না আপনি ভালো ট্রেড করছেন এবং আপনার ৪-৬ মাসের রেগুলার অনুশীলন যদি আপনাকে সার্বিকভাবে পজেটিভ রেজাল্ট দেয় তাহলে আপনি ইনভেস্ট এর কথা চিন্তা করতে পারেন।
অ্যাডমিন সাপোর্টঃ
কোনো প্রতিষ্ঠানের পন্য কেনাবেচা বা সেবা সংক্রান্ত বিশয়াদি নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতা বা গ্রহীতাকে শর্ত সাপেক্ষে যেসকল সাহায্য প্রদান করা হয় সেটাই অ্যাডমিন সাপোর্ট নামে পরিচিত। এই ধরনের কাজ করার জন্য ইংরেজীতে অত্যন্ত দক্ষ হওয়া বাঞ্ছনীয় পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট প্রশাশনিক বিষয়ে দক্ষ, মিষ্টভাষি এবং ধৈর্যশীল থাকা একান্ত প্রয়োজন। মার্কেটপ্লেসগুলোতে অ্যাডমিন সাপোর্ট এর যথেষ্ট কাজ পাওয়া যায়। আপনি যদি নিজেক উক্ত
কাজের জন্য যোগ্য মনে করেন তাহলে আপওয়ার্ক,ইল্যান্স, গুরু, ফ্রিল্যান্সার এ আপনার যথেষ্ট আয়ের জন্য আদর্শ হতে পারে।
রাইটিং এ্যান্ড ট্রানস্লেশনঃ
আপনি যদি মানসম্পন্ন ইংরেজীতে এক কথায় দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে আপনার আয়ের জন্য হয়তো খুব বেশি বেগ পেতে হবে না। অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে ইংলিশ রাইটিং এর যথেষ্ঠ কাজ পাওয়া যায় যার জন্য ক্লায়েন্ট উচু দরের পেমেন্ট দিয়ে থাকে। সাথে আপনি যদি জেনে থাকেন কোনো উন্নত দেশের ভহুল ব্যবহৃত ভাষা তাহলে আপনি পেয়ে যেতে পারেন সেই ভাষার ট্রানস্লেশনের কাজও।
এবার সিদ্ধান্ত নিন আপনি কোন কাজটিতে ভালো করতে পারবেন। সিদ্ধান্তে আসার পর ঐ কাজ আপনি গুগল ঘাটাঘাটি করে খানিকটা শিখে নিতে পারেন অথবা সবটাই। আসেপাশে খোঁজ নিন কোন ভালো কোনো ট্রেনিং প্রতিষ্ঠান আছে কিনা যেটাতে ভালো মানের শিক্ষক ক্লাস নেয়। ভালোভাবে পড়াশুনা করে কাজকে হাতের মুঠোয় নিয়ে আসুন।
আপনি দেশের বাইরের বাজারে আনলাইনে কাজ করতে যাচ্ছেন কিন্তু আপনি জানেনা কিভাবে একজন বিদেশি’র সাথে আলাপ করতে হয়, তাহলে আপনি কাজে পটু হয়েও বারবার থুবড়ে পড়বেন। তাই কাজ শিখে নেওয়ার সময় থেকেই আপনাকে ইংরেজীতে দক্ষ হয়ে উঠতে হবে যাতে আপনি আপনার ক্লায়েন্ট এর সাথে মন খুলে কথা বলতে বা চ্যাটিং করতে পারেন।
এবার অনলাইন মার্কেটপ্লেসে ফ্রি একাউন্ট খুলে আপনি আপনার একটি প্রফেশনাল প্রফাইল তৈরী করে কাজে নেমে পড়ুন। আপওয়ার্ক,ইল্যান্স, গুরু, ফ্রিল্যান্সার এ, এগুলো সবচেয়ে ভালো মানের ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটপ্লেস।

কোন মন্তব্য নেই: